অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী আদরি বেগম
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের ব্রাক্ষনগ্রাম মৃধাপাড়া গ্রামে বসবাস করেন মোসা: আদরি বেগম। বর্তমানে তার বয়স ৩১ বছর। তিনি পড়াশোনা করেন কোনমতে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত। ৩ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। আর্থিক অনটনের কারনে ১৪ বছর বয়সে আদরির বিয়ে দিয়ে দেয় তার বাবা-মা। স্বামী মোঃ আনোয়ার হোসেন পেশায় একজন দিনমজুর। প্রায় ৪ কাঠা খাস জমির উপর বসবাস করেন তিনি। তাঁর দুই সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান গ্রামের মাদ্রাসায় ৪র্থ শ্রেনীতে পড়ে।
দিনমজুর স্বামীর সামান্য আয় দিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয় আদরিকে। সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকে। কিন্তু আদরি তাতে দমে যায়নি। তিনি সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে নকশি কাঁথা সেলাই করে আয় করতে শুরু করেন। এরপর তিনি সন্ধান পান আড়ং কোম্পানির বিভিন্ন কাপড়েরর উপর হাতের সেলাইয়ের কাজ। তিনি একাজে সফলতা পেলে আস্তে আস্তে ৫টি গ্রামের ৮০ টি পরিবারের কর্ম-সংস্থানের ব্যবস্থা করেন। তিনি এখন নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলাতে চান।
বর্তমানে তার পারিবারিক আয় বেড়েছে। তার পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। তার এখন ১টি গরু, ২টি ছাগল, ১০টি মুরগি এবং ১০টি পাতি হাঁস রয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য হবে প্রায় ৮০,০০০/-। তাঁর স্বামী কৃষি দিন মজুরি করে মাসে আয় করে ৭৫০০/-। আদরি এখন প্রতি মাসে বুটিকস এর কাজ করে আয় করে গড়ে ১০,০০০/- করে।
অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী
উপরোক্ত ক্যাটাগরিতে মনোনীত করার কারণসমূহ:
১) দারিদ্রের সাথে লড়াই করে সংসারে সুখ ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পেরেছেন।
২) সংসারের সকল কাজ নিজ হাতে করেন। সংসারের সকল কাজ সামাল দিয়েও তিনি প্রতি মাসে গড়ে ১০,০০০/- আয় করেন।
৩) তিনি শুধু নিজেই আয় করছেন না। তার সাথে ৫টি গ্রামের ৮০ জন মহিলার কর্ম-সংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। ভবিষ্যতে তিনি আরো বেকার নারীদের কাজের সুযোগ তৈরি করার জন্য কাজ করছেন।
তিনি একজন নারী হয়েও তার মনের জোরকে কাজে লাগিয়ে গ্রামবাসীর সেবায় নিজেকে সবসময় নিয়োজিত রেখেছেন। তিনি গ্রামের বেকার নারীদের কাছে একটি অনুপ্রেরণা।